স্থানীয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রশাসনের পদক্ষেপের গাফিলতি ও পুলিশ কতৃক শিক্ষার্থীদের গুলিবিদ্ধের অভিযোগে এবার উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেছে শিক্ষার্থীরা এবং ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভ করছে।
রবিবার (১২ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে নিজ বাস ভবনের সামনে থেকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের সামনে দিয়ে সাবাস বাংলাদেশ মাঠে তাকে অবরুদ্ধ করে। একই সঙ্গে মহাসড়কে অবস্থান নেয় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।
এসময় উপাচার্য আলোচনার জন্য শিক্ষার্থীদেরকে আহবান করে। কিন্তু বিক্ষিপ্ত শিক্ষার্থীরা বিনোদনপুরে (সংঘর্ষের ঘটনাস্থল) গিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনায় আসতে বলে। এতে উপাচার্য সম্মত না হলে উপাচার্যকে ভেতরে রেখে শিক্ষার্থীরা চারদিক থেকে আটকে ধরে। বিভিন্ন স্লোগানে উত্তাল হতে থাকে ক্যাম্পাস।
একই সময়ে, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক দখল করে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। তার বিপরীত পাশেই অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা। এসয় তারা মহাসড়ক আগুন দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, গতকালকের সংঘর্ষের ঘটনায় রাত ১২টা অবধি আমরা প্রক্টরকে দেখতে পাইনি। একজন প্রক্টরের অনেক সাহসী হওয়া উচিত। মেরুদণ্ডহীন কোনো লোককে এসব গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো উচিত না। কালকে আমরা অভিভাবকহীনতায় ভুগেছি। আমাদের শরীর থেকে রক্ত ঝড়েছে, আর প্রক্টরের কোনো খোঁজ নেই। তাহলে প্রক্টরের কাজ কী? এমন দায়িত্বহীন প্রক্টরের অবিলম্বে পদত্যাগ চাই। সন্ধ্যায় কাপল ধরার জন্য আনাচে-কানাচে টর্চলাইট মারা তার একমাত্র কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সমন্বয়ক আব্দুল মজিত অন্তর বলেন, আমরা এখানে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে দাঁড়িয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনা সামাল দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছিল। শনিবার রাতে শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাইকে দেখা যায়নি। তারা কি নাকে তেল দিয়ে ঘুমায়?
এদিকে বেলা ১২টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সিনেট ভবনের সামনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ ও প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে ২ ভাগে বিভক্ত হয়ে হাজারো শিক্ষার্থী আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, শনিবার (১১ মার্চ) বগুড়া থেকে বাসে করে রাজশাহী আসছিলেন রাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী। সিটে বসাকে কেন্দ্র করে এক ব্যক্তির সঙ্গে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। ঘটনার পরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
শিক্ষাঙ্গন/আবির
Facebook Comments